আমার সম্পর্কে


মোবায়দুল সাগর


ম্লেচ্ছ, সন্ন্যাসী, যাযাবর।

মোবায়দুল সাগর ২০০০ সালের ৯ অক্টোবর বাংলাদেশের যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (BUBT)-তে বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) এ অধ্যয়নরত।


শৈশব থেকেই বই পড়ার প্রতি তাঁর ছিল অগাধ ভালোবাসা। ঈশপের গল্প সমগ্র, ঠাকুমার ঝুলি, সুকুমার সমগ্রের মতো শিশুতোষ সাহিত্যের হাত ধরে শুরু হয় তাঁর সাহিত্যভ্রমণ। কৈশোরে হিমু ও মিসির আলির রহস্যময় জগতে হারিয়ে গেছেন বহুবার। প্রিয় লেখকদের তালিকায় রয়েছেন শ্রদ্ধেয় ঔপন্যাসিক শ্রী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কবি জীবনানন্দ দাশ এবং গল্পকার সৈয়দ মুজতবা আলী। তাঁর প্রিয় উপন্যাস শ্রীকান্ত এবং পুতুল নাচের ইতিকথা (মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়), প্রিয় কাব্যগ্রন্থ রূপসী বাংলা ও বনলতা সেন, এবং প্রিয় কবিতা জীবনানন্দ দাশের অন্ধকার। গল্পের জগতে সবচেয়ে প্রিয় তাঁর সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা বেঁচে থাকো সর্দিকাশি।


কবিতা লেখার হাতেখড়ি হয় ২০১৪ সালে। মার্কিন কবি রবার্ট ফ্রস্টের 'Fire and Ice' কবিতাটি পাঠ করে তিনি প্রথম কবিতার প্রতি গভীর টান অনুভব করেন এবং সেই থেকেই শুরু হয় কাব্যচর্চা। ছোটবেলার সাহিত্যপ্রীতি ও কৈশোরের পাঠ-অভিজ্ঞতা আজ তাঁর কবিতায় প্রাণ জোগায়। তিনি মনে করেন, কবিতা শব্দের মেলবন্ধনে জন্ম নেয়—একটি শব্দ যখন আরেকটি শব্দের পাশে দাঁড়িয়ে ছন্দ ও সুর তৈরি করে, তখনই তার আত্মপ্রকাশ ঘটে কবিতারূপে। তাঁর বিশ্বাস, প্রকৃত কবিতা সেটা যা হৃদয়ের গভীরে ছুঁয়ে যায় নিঃশব্দে। সমকালীন পাঠকের মনোযোগ ও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে তিনি মনে করেন, আধুনিক কবিতায় থাকা উচিত সহজ ভাষার প্রাঞ্জলতা এবং অনতিদীর্ঘ পরিসরের সংবেদনশীলতা—যাতে কম শব্দেই বলা যায় অনেক কথা।

তাঁর লেখালিখিতে পাওয়া যায় আবেগ, বাস্তবতা এবং নান্দনিকতার মেলবন্ধন, যা পাঠকের মনে অনুরণন তোলে দীর্ঘ সময় ধরে।

মোবায়দুল সাগরের লেখালিখিতে সর্বাধিক প্রাধান্য পায় পৌরাণিক কাহিনী, তবে সেসবের ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে থাকে বিজ্ঞানের সূক্ষ্ম ছোঁয়াও। তিনি বিশ্বাস করেন, মানবসভ্যতার ইতিহাসে পৌরাণিক কাহিনীগুলোই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্যরূপ। তাঁর লেখায় যেমন দেখা যায় প্লেটোনিক প্রেমের সূক্ষ্ম আবেগ, তেমনি উপস্থিত থাকে খোলামেলা যৌনতার সাহসী প্রকাশ। ইতিহাস আর ভূগোলের দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর সাহিত্যে গড়ে তোলে সময় ও স্থানভিত্তিক বাস্তবতার কাঠামো।


তিনি সাম্যের প্রেমে বিশ্বাসী—যেখানে জাত, ধর্ম বা শ্রেণি কোনো বিভাজন নয়। কমিউনিজম, সাম্যবাদ এবং ন্যায়ের আদর্শ তাঁর লেখায় ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থিত। পাশাপাশি, তিনি সাহসের সঙ্গে ট্যাবু ও টোটেমের মতো সামাজিক নিষেধ ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করেন তীব্র প্রতিবাদ। তাঁর লেখায় মাঝে মাঝে ঝলকে ওঠে সংশয়বাদ, নাস্তিকতা ও যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি—যা পাঠককে ভাবায়, জাগায় এবং প্রশ্ন তোলে।














2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন