রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর লেখা তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে একটি বই পড়েছিলাম। বইটিতে ঠাকুর পরিবারের পূর্বপুরুষদের আদিনিবাস এবং তাদের সম্পর্ক বলা হয়েছে। ঠাকুর পরিবারের আদিনিবাস ছিল খুলনা অঞ্চলে। তখন খুলনার শাসক ছিলেন একজন মুসলিম। ঠাকুর পরিবারের পূর্বপুরুষরা শাসকের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন। এক রমজান মাসের ঘটনা, শাসক সহ তার সকল মুসলিম মন্ত্রী,কর্মচারী সিয়াম সাধনায় ব্রত আছেন। একদিন শাসকের শাসনকার্য চলার সময় তার সভায় সকল মন্ত্রী অর্থাৎ হিন্দু মুসলিম সবাই উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা রান্নার সুগন্ধ সভায় ছড়িয়ে পড়ল। শাসক সেই সুগন্ধ নাকে শুঁকে তার বাবুর্চির বন্দনা করলেন। তা দেখে ঠাকুর পরিবারের একজন বললেন শাস্ত্রে আছে যে কোন খাবারের সুগন্ধ যদি একবার নাকে যায় তা অর্ধ খাওয়ার সমান হয়। অর্থাৎ আপনাদের সকলের রোজা ভঙ্গ হয়েছে। এটা শোনার পর শাসক তার প্রতি প্রচন্ড রেগে যান এবং শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। রমজান মাস চলে গেলে কোন একদিন সবাই এমন সভায় উপস্থিত আছেন। হঠাৎ করে আবারো রান্নার সুগন্ধ ভেসে আসল।সুগন্ধ ছিল অতি মাত্রার, গন্ধে মো মো করছিল। সভায় উপস্থিত সকলে তা নাকে শুঁকে নেন। কিন্তু এটা ছিল গরুর মাংসের রান্না।শাসক ঠাকুর পরিবারের সদস্যদেরকে বললেন তোমরা গরুর মাংসের ঘ্রাণ নাকে নিয়েছো অর্থাৎ তোমাদের তা অর্ধেক খাওয়া হয়ে গেছে।এখন তোমাদের বাকি অর্ধেকটা খেতে হবে। এভাবে তারা শাসকের চালাকিতে জাত হারা হন এবং খুলনা ত্যাগ করে জোড়াসাঁকোতে চলে আসেন।
ট্যাগ:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন