বোম্বেটে কাহিনি
—মোবায়দুল সাগর
"খাজনার সন্ধান পশ্চিম ইন্ডিয়ায়!"
সে কথা আদিম এখন বোম্বেটে জানে
চোরাকারবারি হয়ে
ভিক্ষা প্রার্থনায়
ভীতি ছিল না এটুকু
ওপারে কী আছে
চাওয়া-পাওয়া এতো তবু
নির্লজ্জ
খুন খারাপি দিনের পর
দিন চলে
লুট সে তো রক্তে আছে
মিশে একাকার
খচ্চর-ঘোড়া-শূকর এর
কাঁচা-কাঁচা-
মাংশও তখন সুস্বাদু,
কপালও
সঙ্গ দেয় যা তখন
শয়তানী বুদ্ধি।
বেশ্যার নোংরা ঘরে ওঁত
পেতে বসে,
জলন্ত চোখ আর ওড়ে গরম
টাকা।
আবার ছুটে চলে পাল
তুলে জাহাজ
কখনো বাহামা কখনো বা
বার্বাডোজ ।
লাল মানুষ --না ওরা
পশু শুধু পশু।
স্পানিয়ার্ড, পর্তুগিজ
ওরাও যে সাথে
কামানের বর্ষণে গর্জে
ওঠে সাগর,
হাত বোমা ভিজে
নিস্ক্রিয় – শত্রু সামনে
কাপ্তান বলে উড়িয়ে দে
জলি রোজার
তলোয়ারের ঝন-ঝন শব্দ
ভৌতিক
চারিদিকে গন্ধকের কটু
গন্ধ ভরা
আরও ভৌতিক যখন বন্য়া
রক্তের
অই হাহাকার-চিৎকার নেয়
কেড়ে
আকুতি-মিনতি করা
প্রাণ, লাল পানি—
না এতো মদ নয় এ রক্তের
শরব।
যা যা আছে দিয়ে দে
বাক্য যেন মৃত্য়ুর
লুট কর লুট কর
সোনা-দানা যা পাস।
যে ছিল শূন্য তার যে
শেষ দিন তবে –
ছিড়ে ছিড়ে খাক তোর
গোস্ত ঐ হাঙ্গর।
চলো যাওয়া যাক বন্দরে –
ত্রিনিদাদে।
এমন বানীতে জয়ের
উল্লাসে নাচে
হতাহত বোম্বেটেরা ভাগ
চায় বেশি
কপাল কুঁচকালো ভ্রু
কুঁচকালো রাগে
শান্ত হয়ে হঠাৎ রাজি
কাপ্তান সাব।
ভাগ বাটোরা শেষ,
নোঙ্গর ফেলা হল
যে যার টাকা নিয়ে ছুটে
চলে আমোদে
বেশ কাটে দিন যেন
স্বর্গের ফেরেস্তা,
ভ্রম হয় তখন খোলে চোখ
তখন
ফুরায় পতিতার জন্য়
উড়ানো টাকা
আবার সব কোরাস গায় –
চলো যায়
লুট করি পানামা। কাপ্তান
দিলো সায়
দল হল ভারী, কাপ্তান
বীর বিজয়ী।
একশো নয় দুইশো নয়
তিনশত —
বোম্বেটে হুংকার দেয়ে
ওঠে জাহাজে
তখন জাহাজে ওড়ে বৃটিশ
পতাকা
যাত্রীবাহী জাহাজ
সামনে যেই পড়ে
মৃক্যুপুরী পতাকা জলি
রোজার উঠে
জেগে গৌরবে। হায় কী
সর্বনাশ এলো!
কেউ বা করে আত্মসমর্পন
কেউ বা –
লড়ে জান-মাল বাচাঁতে।
বোম্বেটে দল
তখন হিংস্র পশু।
তলোয়ার ভেদ করে
রক্ত-মাংশ-হাড়
সবকিছু। যেন এ
তাদের লক্ষ বছরের পেশা
পরম্পরা।
আলাদাৎপুর, নড়াইল ।
ট্যাগ:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন