বেকারত্ব এবং বাংলাদেশ
—মোবায়দুল সাগর
বাংলাদেশের মানুষ অতি অতি বেকার। এদের কোন কাজ নেই। এরা সবকিছুই ফ্রীতে খোঁজে, কোন কিছু ফ্রীতে দেখার সুযোগ পেলে এরা সেই সুযোগ কোনোভাবেই হাত ছাড়া করে না। (বাংলাদেশের মানুষ টাকা দিয়ে কোন কিছুই দেখে না বা দেখতে চাই না; তার কারণ অর্থের অভাব) বাংলাদেশে ফ্রীতে যেসব জিনিস দেখা যায় তা অতি হাস্যকর, যেমন কোথাও বড় কোন এসকেভেটর, বুলডোজার কিংবা বড় ক্রেন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, সেখানে প্রায় এক দেড়শ' লোক সেই কাজ অতি উৎসাহের সাথে দেখছে।
কেউ হা করে বিষ্ময়ের সাথে কাজ করা দেখছে। হঠাৎ কোন এক পথচারী খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখল কিভাবে বিশাল দৈত্যকার যন্ত্রগুলো কাজ করছে। এই ধরনের লোক কিছুটা ব্যস্ত হয়। তবে যেসব লোক কাজ করা দেখছে হয়ত অনেকেই সকালে এসেছে থাকবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরা একেবারে নিশ্চিন্ত, এদের একটাই কাজ কিভাবে এসকেভেটর গর্ত করছে তাই দেখা। সেখানে মাঝেমধ্যে কিছু ফেরিওয়ালা আসবে বাদাম বিক্রি করতে যেহেতু ভিড় ভালোই জমেছে, সেখান থেকে সে যদি কিছু সওদা করে নিতে সেই পারে সেই আশায়। তবে হাতে গোনা কিছু লোক সেই বাদাম কিনবে আর বাকিরা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে বাদাম গুলোর দিকে। কেউ কেউ দেখবে কিভাবে বাদাম খাচ্ছে, এতেও এক বড় বিষ্ময় রয়েছে তাদের। এই সব লোক বাদাম কিনে খেতে পারে না; তার একটাই কারন অর্থের অভাব। তাই অন্যেদের বাদাম খাওয়ার সুখে নিজেকেও সুখি করে নেয়।
ছাগল, পাগল, শূকর, কুকুর থেকে শুরু করে সবকিছু এদের উৎসাহের সাথে দেখার আওতায় থাকে। আর্মিও এদের দেখার আওতায় পড়ে। জলপাই রঙের কাপড়, হেলমেট পরা মানুষগুলো দেখতে কেমন লাগছে তা তারা দেখবে। হোক না কোন বৈশ্বিক মহামারী তাদের একটাই লক্ষ্য ঘর থেকে বেরিয়ে আর্মি দেখা। এলাকা লকডাউন করা হয়েছে তাতে তাদের কোন পরোয়া নেই লকডাউন জিনিসটা কি সেটাতেও তাদের একটা বিষ্ময় রয়েছে । বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে! বাড়ির সামনে ৫০-৬০ জনের একটা ভিড় লেগে আছে, তারা লকডাউন দেখতে এসেছে যেহেতু বাড়ি লকডাউন ফ্রীতে দেখা যায় । যদি বাড়ি লকডাউন বিশ টাকার টিকিট কেটে দেখতে হত তাহলে এরা মুখ ভেঙচি দিয়ে বলত "লকডাউন দেখতে বিশ টাকার টিকেট কাটতে হবে, সবকিছুতেই ব্যবসা পেয়েছে"। বিশ টাকার মূল্য এদের কাছে অনেক কিন্তু জীবনের মূল্য এদের কাছে নেই ।
রাস্তায় প্রকাশ্যে খুন করা হচ্ছে সেটাও এরা উৎসাহের সাথে দেখছে। কেউ পাশে চটপটি খাচ্ছে আর মানুষ কোপানো দেখছে যেন কোন মুভি থিয়েটারে মুভি দেখতে এসেছে। ও হ্যাঁ এরা টাকা দিয়ে সিনেমা দেখার পাত্র নয়।তাই লাইভ এ্যাকশন দেখছে ফ্রীতে।
আমিও এক বড় অকর্মন্য, তাই এমন ফালতু কিছু জিনিস লিখলাম। এই সমাজ ব্যবস্থায়, এই সমাজের সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় আমিও তাদের মত এক দর্শক।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন