বৃহন্নলা
          —মোবায়দুল সাগর

আম গাছের মগডালটায় আজও হলদে পাখিটা বসে আছে। কি অদ্ভুত এক পাখি! পালকগুলো সব হলুদ। গত তিনদিন ধরে পাখিটাকে লক্ষ্য করছি। দীর্ঘ সময় ধরে এক ডালেই বসে থাকেঠিক আমার মত। ফাঁকা মাঠের এই পুকুর পাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে যেমন বসে থাকি। কিন্তু এই হলদে পাখির বসে থাকার কারণ কি? সে কি কারও জন্য অপেক্ষা করছে? দূর থেকে লক্ষ্য করলাম আকাঁ-বাকা মাটির পথটা দিয়ে যুঁথী হেঁটে আসছে। আজ ও বেগুনি রঙের একটি কামিজ পরেছে। খুব দ্রুত পায়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।

"এত দ্রুত আসছ যে?"

"অনেক কষ্টে আসতে হয়েছে এখানে। মা খুব প্রশ্ন করছিল। বারবার বলছিল নীলাদের বাড়ি এত কি?"

"কি ঝলমলে রোদ বলো। তোমাকে আজ একটু বিষণ্ন মনে হচ্ছে।"

"পারভেজ তোমাকে একটা কথা বলতে হবে। সত্য কথা।"

"আমি কি মিথ্যা বলি?"

"তোমার সাথে আমার সম্পর্ক কি?"

"ঐ আকাশ এবং মাটির মাঝে যেমন সম্পর্ক।"

"তুমি কি দূরত্ব বোঝাতে চাচ্ছো। আমি তা জিজ্ঞাসা করিনি। জানতে চাই এই সম্পর্কের নাম কি।"

"খুব সম্ভবত একটি কবর।"

"পারভেজ আমি কি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি।"

"দেখো যুঁথীবারবার এত ঘড়ি দেখছ কেন। তাড়া আছে বুঝি।"

"আমাকে বিয়ে করবে?"

"বিয়ে কি তোমার সমস্যার সমাধান?"

"আমি তাই মনে করি।"

"আমি যদি তোমাকে না পাই তবে আমি কাপুরুষ না হলে বৃহন্নলা।"

"আমাকে কিভাবে পেতে চাও?"

"যদি মনে কর এই জীবনে তবে আমাকে বিদ্রোহ করতে হবে আমার বিরুদ্ধে।"

"তুমি সত্যি কাপুরুষ তবে বৃহন্নলা কি-না জানি না।"



০৭-০৩-২০২১
আলাদাৎপুর, নড়াইল।










Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন