দীর্ঘতম ভাষা আন্দোলন

মোবায়দুল সাগর


বাঙালি একটি স্পর্শকাতর জাতি। স্বাধীনতা, ভাষা, ধর্ম, জাতিসত্বা নিয়ে এরা খুবই সংবেদনশীল। এসকল বিষয়ে যখন ভিন্ন জাতির লোক আঘাত হানে তখন বাঙালিরা নিজেদের প্রাণ দিয়ে তা নিজেদের অধিকারে আনে। অথচ এসকল বিষয় রক্ষা করার কোনো মানসিকতায় তাদের মাঝে দেখা যায় না। অন্য জাতির লোক যখন তাদের অনুভূতিতে আঘাত হানে তখনই তারা বাঙালি হয়ে ওঠে। কিন্তু যখন তাদের অধিকার আদায় হয়ে যায় তখন তারা আর বাঙালি থাকে না, হয়ে ওঠে তোষামোদে এক জাতি।
ভাষাও বাঙালিদের একটি স্পর্শকাতর অংশ। মাতৃভাষার অধিকার নিয়ে বাঙালিরা পৃথিবী বিখ্যাত। মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের জন্য তারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতেও দ্বিধাবোধ করে না। পৃথিবীর দীর্ঘতম ভাষা আন্দোলনও এই বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে। যা মানভূমের বাংলা ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। এটি ১৯১২ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল ব্যাপী চলতে থাকে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সালে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। মানভূম তৎকালীন ভারতের বিহার রাজ্যের একটি জেলা ছিল। ভাষা আন্দোলন সফল হলে মানভূম জেলা ভেঙে একটি অংশ পুরুলিয়া জেলা নামে পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভূক্ত হয়। আরেকটি অংশ বিহারের ধনবাদ জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়।


যাইহোক এই ভাষা আন্দোলনের কারণ বর্তমান পুরুলিয়া জেলা ১৯৫৬ সালে বিহার রাজ্যের একটি অংশ ছিল। সেইসময় রাজনৈতিকভাবে বিহারের স্কুল-কলেজ-দপ্তরে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাভাষী জনগণ হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, বাংলা ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় পুরুলিয়া কোর্টের আইনজীবী রজনীকান্ত সরকার, শরৎচন্দ্র সেন এবং গুণেন্দ্রনাথ রায় জাতীয় কংগ্রেস ত্যাগ করে জাতীয়তাবাদী আঞ্চলিক দল লোকসেবক সঙ্ঘ গড়ে তোলেন। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে তাদের সুদৃঢ় আন্দোলন করেন। এরপর ১৯৫৬ সালে ভারত সরকার মানভূম জেলা ভেঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সঙ্গে একটি নতুন জেলা (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলা) সংযুক্ত করতে বাধ্য করেন।
উক্ত সময়ে বাংলা ভাষা নিয়ে আরেকটি ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়। ১৯৪৭-১৯৫৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশে এই আন্দেলনটি সংঘটিত হয়। আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, আব্দুল জব্বার, শফিক, রিক্সাচালক আউয়াল, কিশোর অলিউল্লীহ। আহত হন আরও অনেকে।
দুটি ভাষা আন্দোলনই সফল হয়েছে। বাঙালিরা আসলে অন্য জাতির দ্বারা নিজেদের জাতিসত্বায় হস্তক্ষেপ মোটেই পছন্দ করে না। কোন জাতিই বা করে? কিন্তু জাতিসত্বা রক্ষার মানসিকতায় বাঙালিরা ভাঁড়ে ভবানী। ট্যাগ:

জীবনবোধের কবিতা   দেশাত্মবোধক কবিতা   ধর্মীয় চেতনার কবিতা প্রকৃতির কবিতা প্রতিবাদী কবিতা প্রেমের কবিতা বিবিধ কবিতা বিরহের কবিতা মানবতাবাদী কবিতা রূপক কবিতা   রম্য কবিতা   শিশুতোষ ছড়া-কবিতা চতুর্দশপদী কবিতা সনেট কবিতা মহাকাব্য ছন্দবৃত্ত কবিতা মাত্রাবৃত্ত কবিতা অক্ষরবৃত্ত কবিতা পদ্য-গদ্য গল্প সাহিত্য উপন্যাস বিখ্যাত কবিতা ছোট কবিতা নতুন কবিতা ভালো বাংলা কবিতা আনকমন কবিতা বিরহের কবিতা কবিতা বাংলা জীবনমুখী কবিতা উপন্যাস কি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস উপন্যাস কত প্রকার বাংলা উপন্যাসের ইতিহাস জনপ্রিয় উপন্যাস বাংলা উপন্যাসের উদ্ভব ও বিকাশ ঐতিহাসিক উপন্যাস বাংলা উপন্যাসের ধারা শিক্ষনীয় গল্প হাসির গল্প বাংলা গল্প গল্প  রোমান্টিক জীবনের গল্প ভালো গল্প ছোট গল্প ডাইনি গল্প

 






Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন